‘তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ রোহিঙ্গা ইস্যুতে জটিলতার কারণ ’ নিজস্ব প্রতিবেদক, নতুন খবর |

গণহত্যা ও নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিককে নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরানো সম্ভব না হলেও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের পাল্লা ভারী হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। তবে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের কারণে জটিলতা বাড়ছে বলে মনে করেন মন্ত্রী।
রবিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে দুটি বই প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মিয়ানমার দূতাবাসের সাবেক কূটনৈতিক মেজর (অব.) মোহাম্মদ এমদাদুল ইসলামের প্রকাশিত বই দুটি হলো- ‘রোহিঙ্গা-নিঃসঙ্গ নিপীড়িত জাতিগোষ্ঠী ও শেষ সীমান্তের পর কোথায় যাব আমরা’। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে প্রকাশনা সংস্থা খড়িমাটি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শিরীন আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমারের আন্তরিকতার অভাবে সাড়ে তিন বছরেও রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি। রোহিঙ্গারা তাদের দেশের সরকারকে বিশ্বাস করে না বলেই তারা সেখানে যেতে চাচ্ছে না। তবে বাংলাদেশ সরকার তাদের ফেরত পাঠানোর সব রকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের পাল্লা ভারী হচ্ছে। তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপে রোহিঙ্গা ইস্যুতে জটিলতা বাড়ছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা চলছে। ১৯৭৮ সালে দেখেছি, ১৯৯২ সালে দেখেছি। তখন অনেক রোহিঙ্গা আমাদের দেশে এসেছে। ১৯৯২ সালে প্রায় দুই লাখ ৫৩ হাজার রোহিঙ্গা আমাদের দেশে আশ্রয় নিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে আলোচনার মাধ্যমে তারা দুই লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা ফেরত নিয়েছে। সেজন্য আমরা আশাবাদী। এখনো তারা নিয়ে যাবে। কিন্তু কখন তা বলা মুশকিল।’
এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘মিয়ানমার আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র। তাদের সঙ্গে আমাদের আলাপ হয়েছে। তারা বারবার বলছে, তারা তাদের লোকগুলোকে নিয়ে যাবে। কখনো বলেনি নিয়ে যাবে না। তবে আমরা বলেছি, ঠিক আছে নিয়ে যাও, তবে অবশ্যই তাদের নিরাপত্তা তোমাদের নিশ্চিত করতে হবে। তারা বলেছে, আমরা তাদের (রোহিঙ্গা) সিকিউরিটি এনশিউর করবো। আমরা তাদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় আজ প্রায় সাড়ে তিন বছর একজন রোহিঙ্গাও ফেরত যায়নি। কারণ তাদের মধ্যে আন্তরিকতার অভাব।’ মোমেন বলেন, ‘সিরিয়া, ইয়েমেন, ইরাকের ১০ লাখ বাস্তুহারা মানুষ ইউরোপের ২৭টি দেশে জায়গা নিতে গিয়ে হিমশিম খেয়েছে। আর এখানে ১১ লাখ মানুষকে মানবিক কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশ্রয় দিয়েছেন। প্রথমদিকে বিদেশিরা কেউ সাহায্য করেনি। এখনকার লোকজন তাদের ঠাঁই দিয়েছেন, খাবার দিয়ে সাহায্য করেছেন। আমরা এটি নতুন আদর্শ সৃষ্টি করেছি। বাঙালিরা মানুষ, তারা মানুষকে মানবিকতার চোখে দেখে।’
নতুন খবর//তুম